রাউজানে বিএনপির দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের পর রাতে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এই কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন গোলাম আকবর খন্দকার। এর কিছুক্ষণ পর পদ হারান গিয়াস কাদের চৌধুরীও। আরেক চিঠিতে তার প্রাথমিক সদস্য পদসহ ভাইস চেয়ারম্যান পদও স্থগিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাত ৮টার দিকে কেন্দ্রীয় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক চিঠিতে উত্তর জেলার আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। এর এক ঘণ্টা পর স্থগিত করা হয় গিয়াস কাদেরের পদও। তিনি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন বলে জানিয়েছেন উত্তর জেলা বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক বেলায়েত হোসেন।
তিনি বলেন, ‘প্রথমে উত্তর জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। পরে গিয়াস কাদের চৌধুরীর পদও স্থগিত করে কেন্দ্র।’
দলের ভেতর সংঘাত, হানাহানি সৃষ্টি করে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় আজ উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন, মিরসরাই উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব গাজী নিজাম উদ্দিন, বারইয়ার হাট পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক দিদারুল ইসলাম মিয়াজী, যুবদল নেতা সিরাজুল ইসলাম ও কামাল উদ্দিনকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
প্রথম চিঠিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। শিগগিরই আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হবে। এর পরে আসা আরেক চিঠিতে স্থগিত করা হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর পদও। সেখানে গিয়াস কাদেরের কার্যক্রমের কড়া সমালোচনা করা হয়। বারবার সতর্ক করার পরও গিয়াস কাদের তা আমলে না নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড উস্কে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির গোলাম আকবর খন্দকারকে আহ্বায়ক করে ৪৪ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন ২০২০ সালের ২২ ডিসেম্বর। এতে কাউকে যুগ্ম আহ্বায়ক রাখা হয়নি। সেই কমিটিতে সদস্য করা ৯ জনকে। পরে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। ৫৩ সদস্যের সেই আহ্বায়ক কমিটি আজ বিলুপ্ত হয়। কোন্দলের কারণে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা যায়নি সাড়ে চার বছরেও। উল্টো আধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে কমিটির সদস্যরা বারবার সংঘর্ষে জড়ান।
রাউজানে গত বছরের ৫ আগস্টের পর সহিংসতায় মোট ১৩টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ১০টি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষ হয় অন্তত শতাধিকবার। তিন শতাধিক মানুষ এসব ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়েও পড়েছে লাশ। নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষও হয়েছে অন্তত ২০ বার।
খুলনা গেজেট/এএজে